চোখের কালো দাগ। (cokher kalo dag) | Dark circles under eyes


1/14/20

ADVERTISEMENT
পরে না চোখের পলক,
কি তোমার রূপের ঝলক!
তখন ই পলক পরবে না যখন চোখ দুটি থাকবে সুন্দর ও দাগ হীন!
সুন্দর এক জোড়া চোখ সবারই কাম্য। কিন্তু আমাদের কিছু অসাবধানতার কারণে চোখের নিচে দেখা দেয় কালো দাগ।
চোখের নিচের কালো দাগ আপনার সুন্দর্যের উপর কতটা প্রভাব ফেলে টা এই ছবির মাধ্যমেই বুঝতে পারবেন!
cokher kalo dag,Dark circles under eyes  ,চোখের নীচে কালো দাগ হবার কারণ,চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার উপায়,চোখের নিচের কালো দাগ হওয়া প্রতিরোধের উপায়
Dark circles under eyes
কি দেখলেন তো!
আসুন জেনে নেই ,

চোখের নীচে কালো দাগ হবার কারণ:

১।চোখের নিচে কালো দাগ হবার প্রধান কারণ হলো চোখকে বিশ্রাম না দেওয়া। 

অতিরিক্ত রাত জেগে পড়া, টিভি দেখা বা কম্পিউটারে কাজ করা, গেমস খেলা এবং দিনে সঠিক ভাবে বিশ্রাম না নেয়া চোখের নিচে কালো দাগ হবার কারণ।
বিশ্রাম নেয়া মানে ঘুমানো নয়। অরিক্তি কাজের পরে বিশেষত চোখ ও চোখের পাতা বন্ধ করে রাখলে চোখের বিশ্রাম হয়। 
অতিরিক্ত পরিশ্রমের জন্যও চোখের নীচে কালি জমতে পারে। যদি সঠিক সময়ে খাওয়া না হয় দীর্ঘদিন যাবৎ এমন অনিয়ম হলে এই সমস্যা হয়।

২।অতিরিক্ত অ্যাসিডিটির  সমস্যাতেও চোখের নিচে কালো দাগ  হয়। দেহ  থেকে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম ক্লোরাইড (দেহের জন্য জরুরী উপাদান) বের হয়ে গেলে রক্তে অম্ল ক্ষারের সাম্যাবস্থাতে বিঘ্ন ঘটে। তখন প্রচুর পরিমাণে লবণ পানি বা পানি খেতে হয়। এই সমস্যাতে চোখের নীচে বসে যায়। অতিরিক্ত ঘেমে যাবার পরেও এই সমস্যা হতে পারে (খেয়াল রাখতে হবে, উচ্চ রক্ত চাপের রোগীরা রান্না ব্যতীত লবণ খাবেন না। কাঁচা লবণ দ্রুত রক্তচাপ বাড়ায়)।

৩।ভেজালযুক্ত তেল, প্রসাধনীর ব্যবহার করলেও চোখের  নীচে কালো দাগ হতে পারে।

৪. অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা মানসিক অবসাদ, পারিবারিক ভাবে চোখের নীচের গঠন, দীর্ঘ বছর যাবৎ উচ্চ রক্তচাপ বা জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়ার জন্যও এমন হতে পারে। তবে সবার ক্ষেত্রে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল (ট্যাবলেট) বা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের জন্য চোখের নীচে কালি জমে না।

৫।সঠিকভাবে মুখ পরিষ্কার না করলেও দিনের পর দিন ময়লা জমে চোখের নিচে কালো দাগ হতে পারে , চোখের পাতাতে ইনফেকশানও হতে পারে। চোখের মেকআপ সঠিকভাবে নিয়মিত পরিষ্কার না করলেও চোখের পাপড়িতে রোগ জীবাণু আক্রমণ করে, হতে পারে ইনফেকশান বা এ্যালার্জি জাতীয় যাবতীয় সমস্যা।

৬।ফেসিয়াল করার সময় চোখের নরম মাংসপেশীতে অসাবধানতা বশত ঘষাঘষির জন্যও দাগ হতে পারে। প্রখর রোদের তাপে দীর্ঘক্ষণ থাকলে চোখের ও উপরে কালি জমে। দীর্ঘদিন কড়া রোদে থাকলে দাগ স্থায়ী হয়ে যায়। রক্ত শূন্যতা, হঠাৎ করে প্রচুর ব্যায়াম, আবহাওয়ার পরিবর্তনও এই অবস্থার জন্য দায়ী।

৭।প্রচণ্ড স্ট্রিস , ডিপ্রেশন ও অস্বাস্থ্যকর ভাবে জীবনযাপন করার ফলেও চোখের নিচে কালি পড়তে পারে। আর চামড়া কুচকে যেতে পারে।

চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার উপায়:

১..ঠাণ্ডা শসা।

ঠাণ্ডা শসা।


প্রথমে আপনাকে গোল করে কাটা  শসার টুকরো নিতে হবে।
টুকরোগুলোকে ৩০ মিনিটের ফ্রিজে রাখুন।ঘুমানোর আগে ঠাণ্ডা শসার টুকরো গুলোকে ১০ মিনিটের জন্য চোখের উপর দিয়ে রাখুন। তারপর ঠাণ্ডা জলে চোখ দুটো ধুয়ে ফেলুন। পরের দিন সকালে উঠেই আপনি অনুভব করতে পারবেন আপনার চোখ কতটা ফ্রেশ লাগছে। শসাতে এসে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট , ভিটামিন সি" ও  ভিটামিন "কে" রয়েছে । যা চোখের নিচের কালো দাগগুলোকে হালকা করে এবং চেহারার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। তাই রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করুন।

২.অ্যান্টি এজিং আইস ক্রিম।

অ্যান্টি এজিং আইস ক্রিম


খুব সহজেই  ঘরোয়া পদ্ধতিতে অ্যান্টি এজিং আইস ক্রিম তৈরি করা যায়। এটি চোখের নিচের কালো দাগ দূর তো করবেই সাথে রিংকেলস ও দূর হবে। প্রথমে এক চামচ অ্যালোভেরা জেল নিয়ে তার মধ্যে হাফ চামচের একটু কম পেট্রোলিয়াম জেলি নিন।তার সাথে ৪-৫ ফোঁটা নারিকেল তেল ও দুটো ভিটামিন"ই" ক্যাপসুল নিয়ে মিক্স করুন। এরপর মিক্সারটাকে ভালভাবে মিশিয়ে ভালো একটি কনটেইনারে করে ৭-১০ দিনের জন্য রেখে দিন। এরপর এই ক্রিমটাকে রাতে ঘুমানোর আগে পরিষ্কার হাতে চোখের নিচে চোখের উপরে  হালকা ভাবে ম্যাসাজ করুন। এর মধ্যে যে অ্যালোভেরা জেল আছে টা চোখের কাছের সেনসিটিভ স্কিনকে হাইড্রেটেড ও মস্ট্রাইজড করে। পেট্রোলিয়াম জেলি চোখের ড্রাই  স্কিনকে হাইড্রেটেড  করে ও ড্রাই স্ক্রিনের ফলে যে রিংকেলস হয় সে গুলোকেও দূর করে। নারিকেল তেলের মধ্যে আছে ভিটামিন ও ফ্যাটি অ্যাসিড যা চোখের স্কিন সেলসগুলোকে ভালো রাখে। আর ভিটামিন "ই" ক্যাপসুল চোখের সেনসিটিভ স্কিনকে ক্ষতিকর কেমিক্যালের হাত থেকে রক্ষা করে এবং চোখের নিচের কালো দাগ ও দূর করে।তাই পারলে এই ক্রিমটি প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করুন।এরপর দেখবেন আপনার চেহারা আগের ঠিকে অনেক বেশি উজ্জ্বল দেখাবে এবং চোখের নিচের কালো দাগ ও রিংকেলস গুলো কমতে থাকবে।

৩. শসার রস ও গোলাপ জল।

শসার রস ও গোলাপ জল।


প্রথমে একটি শসা নিয়ে তার ঠিকে ভালভাবে রস বের করে নিন। তারপর শসার রসের মধ্যে এক চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। এরপর মিক্সারটাকে তুলোর সাহায্যে চোখের নিচের স্কিনে ব্যবহার করুন।১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। গোলাপজল স্কিন টোনার হিসেবে খুবই উপকারি।আর এটি স্কিনকে উজ্জ্বল ও করে। এটি সপ্তাহে দুই বার ব্যবহার করলেই যথেষ্ট ।

৪.টমেটো ও লেবুর রস।

টমেটো ও লেবুর রস।

প্রথমে একটি টমেটো নিয়ে তার ঠিকে রস বের করে নিন।
এক চামচ টমেটোর রস নিন এর সাথে এক চামচ লেবুর রস নিন। এটি চোখের নিচে হালকা ভাবে ম্যাসাজ করুন। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি আপনার চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করবে। আপনি এটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন।

৫. মধু।

মধু

রাতে ঘুমানোর আগে ফেস ভালভাবে পরিষ্কার করে নিন। তারপর হাতের আঙুলের মাথায় একটু মধু নিয়ে চোখের নিচের স্কিনে ও কালো দাগের উপর ব্যবহার করুন। মধুতে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল প্রপাটিস আছে আর এটি একটি ব্লিচিং এজেন্টও যার ফলে আপনার চোখের নিচের কালো দাগ এবং রিংকেলস গুলো দূর হবে।

চোখের নিচের কালো দাগ হওয়া প্রতিরোধের উপায়:

১.সঠিক ভাবে ঘুমানো।

সঠিক ভাবে ঘুমানোর উপায়।

 প্রতিদিন রাতে ৬-৭ ঘন্টা ঘুম ভীষণ জরুরী। সঠিকভাবে না ঘুমালে চোখের নিচে কালো দাগ তো পরবে সাথে চেহারাও ভেঙে যাবে। তাই চোখের নিচে কালো দাগ হওয়া প্রতিরোধের প্রথম শর্ত সঠিক ভাবে ঘুমানো।
"ভাই আমার তো ঘুম আসে না আমি কি করবো"
সঠিকভাবে ঘুমানোর জন্য এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন :

সঠিক ভাবে ঘুমানোর উপায়।


২. ইয়োগা বা মেডিটেশন।


ইয়োগা বা মেডিটেশন।


যদি আপনার মনকে শান্ত আর ঠাণ্ডা না রাখতে  পারেন তাহলে উপরের কোনো পদ্ধতি কাজ করবে না। তাই মনকে শান্ত ও ঠাণ্ডা রাখার জন্য প্রতিদিন ইয়োগা বা মেডিটেশন করা অত্যন্ত জরুরি। ইয়োগা আপনার ডিপ্রেশন দূর করে এবং সঠিক ও সুন্দর ভাবে জীবনযাপন করতে শক্তি প্রদান করে। তাই নিয়মিতভাবে ইয়োগা বা মেডিটেশন করার চেষ্টা করুন।

৩.সঠিকভাবে ফেস ধোয়া।

Face wash

চোখের নিচের কালো দাগ প্রতিরোধে সবসময় ফেস পরিষ্কার রাখতে হবে।বাইরে থেকে  এসে সবসময় সঠিক ভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন। মেকআপ থাকলে তা অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভালোভাবে ফেস ধুয়ে ঘুমাতে যান।

৪. সানগ্লাস ব্যবহার।

সানগ্লাস ব্যবহার।



রোদে বের হলে অবশ্যই সানগ্লাস ব্যবহার করবেন। সানগ্লাস সূর্যের ক্ষতিকর কালো রশ্মির হাত থেকে আপনার চোখকে রক্ষা করবে। আর সানগ্লাস ব্যবহার করলে বাইরের ধূলাবালির থেকে চোখ রক্ষা পাবে এবং চোখ ভালো থাকবে।

৫.চোখকে বিশ্রাম দেওয়া।


একটানা কম্পিউটার বা স্মার্ট ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। কাজের ফাঁকে ১৫-২০ মিনিট চোখের পাতা বন্ধ করে রাখুন। একটা তুলা হালকা ভিজিয়ে রাখতে পারেন। এতে ময়লা পরিষ্কার হয় আর সেই সাথে চোখের  মাংসপেশীর বিশ্রাম হবে।

৬.ক্ষতিকর ও মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রসাধনী ব্যবহার না করা।

ক্ষতিকর ও মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রসাধনী

যেকোনো প্রসাধনী ব্যবহারের পূর্বে যাচাই  বাছাই না করে ব্যবহার করবেননা। 
সানস্কিন ক্রীম চোখের নীচে ও পাতার উপরে লাগাবেন না।
মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রসাধনী কখনো ব্যবহার করবেন না। একই প্রসাধনী দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবহারের পরিবর্তে ভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রসাধনী ব্যবহার করুন।

৭.পানি পান করা।

পানি পান করা।

পান করুন প্রচুর পরিমাণে পানি। এতে অ্যাসিডিটি বা গ্যাসট্রিকের পরিমাণও কমবে। আর পানি দেহের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন পৌছে দেয়। নিয়মিত ও প্রচুর পানি পান করলে এবং তৈলাক্ত খাবার তুলনামূলক ভাবে কম খেলে চোখের নীচে কালি  কম পড়বে ।অতিরিক্ত ঘেমে যাবার পরে ওরস্যালাইন বা লবণ পানি খান। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে লবণ পানির পরিবর্তে লেবুর শরবতন খেতে পারেন।

এইসব বিষয়গুলো মেনে চললে আপনাকে আর চোখের নিচে কালো দাগ নিয়ে চিন্তা ও করতে হবে না। আপনিও হবেন সুন্দর চোখের অধিকারী।
সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন । আপনার সামনের দিন গুলো ভালো কাটুক।
-World news

ad