করোনা ভাইরাস


1/29/20

ADVERTISEMENT


করোনাভাইরাস কি?

করোনাভাইরাস



 করোনাভাইরাস শব্দটি ল্যাটিন করোনা থেকে নেওয়া হয়েছে যার অর্থ মুকুট। কারণ ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে ভাইরাসটি দেখতে অনেকটা মুকুটের মত। ভাইরাসের উপরিভাগে প্রোটিন সমৃদ্ধ থাকে যা ভাইরাল স্পাইক পেপলোমার দ্বারা এর অঙ্গসংস্থান গঠন করে। এ প্রোটিন সংক্রামিত হওয়া টিস্যু বিনষ্ট করে। সকল প্রজাতির করোনাভাইরাসে সাধারণত স্পাইক (এস), এনভেলপ (ই), মেমব্রেন (এম) এবং নিউক্লিওক্যাপসিড (এন) নামক চার ধরনের প্রেটিন দেখা যায়।

করোনা ভাইরাসের শ্রেণীবিভাগ


করোনাভাইরাসের শ্রেণীবিন্যাস:


গ্রুপ:৪র্থ  (+)ssRNA)
 বর্গ:নিদুভাইরাস ।
পরিবার: করণাভাইরদা।
উপপরিবার:করোনাভাইরিনা
গণ:

  •        আলফাকরোনাভাইরাস.

  •          বেটাকরোনাভাইরাস.

  •         ডেল্টাকরোনাভাইরাস.

  •         গামাকরোনাভাইরাস.

আদর্শ প্রজাতিকরোনাভাইরাস

করোনাভাইরাসের ইতিহাস।


করোনাভাইরাস প্রথম আবিষ্কৃত হয় ১৯৬০-এর দশকে । প্রথমদিকে মুরগির মধ্যে সংক্রামক ব্রঙ্কাইটিস ভাইরাস হিসেবে এটি প্রথম দেখা যায়। পরে সাধারণ সর্দিকাশিতে আক্রন্ত রোগীদের মধ্যে এরকম দুই ধরনের ভাইরাস পাওয়া যায়। মানুষের মধ্যে পাওয়া ভাইরাস দুটি ‘মনুষ্য করোনাভাইরাস ২২৯ই’ এবং ‘মনুষ্য করোনাভাইরাস ওসি৪৩’ নামে নামকরণ করা হয়।এরপর থেকে বিভন্ন সময় ভাইরাসটির আরো বেশ কিছু প্রজাতি পাওয়া যায় যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০০৩ সালে ‘এসএআরএস-সিওভি’, ২০০৪ সালে ‘এইচসিওভি এনএল৬৩’, ২০০৫ সালে ‘এইচকেইউ১’, ২০১২ সালে ‘এমইআরএস-সিওভি’ এবং সর্বশেষ ২০১৯ সাল চীনে ‘নোভেল করোনাভাইরাস’। এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ ভাইরাসের ফলে শ্বাসকষ্টের গুরুতর সংক্রমণ দেখা দেয়।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের একটি প্রজাতির সংক্রামণ দেখা দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ‘২০১৯-এনসিওভি’ নামকরণ করে। ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চীনের সাথে সাথে ১২টি দেশে সংক্রমণের খবর পাওয়া যায় যাতে ৪৩জনের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করে। নিশ্চিতভাবে আরো ১৩০০ রোগী এ ভাইরাসে আক্রন্ত হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। উহানে দেখা দেওয়া ভাইরাস প্রজাতিটি ‘এসএআরএস-সিওভি’ প্রজাতির সাথে ~৭০% জিনগত মিল পাওয়া যায়।অনেকেই অনুমান করছেন নতুন এ প্রজাতিটি সাপ থেকে এসেছে যদিও অনেক গবেষক এ মতের বিরোধীতা করেন।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ:


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী করোনা ভাইরাস জুনোটিক। অর্থাত্‍ এই ভাইরাস পশুপাখির দেহ থেকে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। তবে সম্প্রতি চীনের উহান প্রদেশে এই ভাইরাস সিফুড খাওয়ার ফলেই ছড়িয়ে পড়ে বলে মনে করা হচ্ছে। এখন আক্রান্ত মানুষের শরীর থেকেও অন্য মানুষের শরীরে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির সংস্পর্শে এলে বা তার সঙ্গে হাত মেলালেও করোনা ভাইরাস শরীরে বাসা বাঁধতে পারে।

করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ হলো- জ্বর, শ্বাসকষ্ট, কাশি। অসুখ আরও বাড়লে কিডনি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। 

সবচেয়ে হতাশার বিষয় , এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোনও ওষুধ বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি।

করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচার উপায়:


  • ঘরের বাইরে বের হওয়ার সময় গ্লাভস ও মাস্ক ব্যবহার করুন। বাসে বা যে কোনো গণপরিবহনেও হাত নাক মুখ ঢেকে রাখুন। যদি কখনও  হাত মেলাতে বা খাওয়ার জন্য গ্লাভস  খুলতেও হয়, ওই হাতে মুখ চোখ নাক স্পর্শ করা যাবে না। আবার গ্লাভস পরার আগে অবশ্যই  সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ হাত দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে ।

  • বাইরে থেকে ফিরে হ্যান্ডওয়াশ বা লিকুইড সোপ দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিন।




  • ময়লা কাপড় দ্রুত ধুয়ে রাখার চেষ্টা করুন,ধরে ফেলে রাখবেন না।


    • ডিম কিংবা মাংস রান্নার সময় ভালভাবে সেদ্ধ করে নিন। 


    • ঘর পরিষ্কার   রাখুন। নিয়মিত আপনার থাকার ঘর এবং কাজের জায়গা পরিষ্কার করুন।

    • কাশি বা হাঁচির সময় মুখ ও নাক ঢেকে রাখতে হবে। টিস্যু ব্যবহার করতে হবে,  একবার ব্যবহারের পর  অবশ্যই ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হবে।

    • যদি কখনও অন্যের ব্যবহৃত সামগ্রী আপনাকে ধরতে হয় কিংবা আপনার কিছু অন্যকে ব্যবহার করতে দিতে হয়, অবশ্যই ওই হাত ধোয়ার আগে নাখ, মুখ বা চোখ ছোঁবেন না।
    • করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর কাছে গেলে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
    ad